
শীতকাল রচনা তৃতীয় থেকে দশম শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের জন্য
শীতকাল রচনা
রচনার পয়েন্টসমুহঃ
- শীতকালের ভুমিকা
- স্থায়িত্ব
- শীতের প্রকৃতি
- শীতের সকাল
- সুবিধা
- অসুবিধা
- উপসংহার
ভূমিকা
ছয় ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। ঋতুচক্রের আবর্তে আমাদের দেশে শীত আসে নিঃশব্দে। আবার চলেও যায় অতি সন্তপর্ণে। উত্তরে হিমেল হাওয়ার প্রভাবে হাড় কাঁপানো শীত এক সময় যেন জেঁকে বসে এদেশের প্রকৃতির বুকে। কিন্তু কিছুদিন পরই আবার দখিনা বায়ুর প্রভাবে প্রকৃতিকে নিঃস্ব করে শীত চলে যায় দূর অন্তরীক্ষে।
স্থায়িত্ব
বাংলা ঋতুচক্রের পঞ্চম ঋতু শীতকাল। পৌষ ও মাঘ এই দুই মাস শীতকাল। কিন্তু কার্তিক মাসের মাঝামাঝি থেকে একটু একটু করে শীতের আগমন ঘটতে থাকে এবং ফাল্গুল মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
শীতের প্রকৃতি
শীতকালে সকাল-সন্ধ্যা ঘন কুয়াশা পড়ে। কোন কোন দিন সূর্যের মুখ পর্যন্ত দেখা যায় না। সকালে ঘুম থকে উঠে চারদিকে তাকালে মনে হয় প্রকৃতি যেন সাদা চাদর মুড়ি দিয়ে ঘুমাচ্ছে। এ সময় অধিকাংশ গাছের পাতা রুক্ষ ও বিবর্ণ হয়ে ঝরে যায়। শীতে আড়ষ্ট হয়ে মানুষ, পশুপাখি, কীটপতঙ্গ নির্জীব হয়ে পড়ে। এ সময় সূর্য দক্ষিণ দিকে হেলে পড়ে। ফলে দিন ছোট এবং রাত বড় হয়।
শীতের সকাল
শীতের সকাল মানেই কুয়াশাচ্ছন্ন ও শিশিরসিক্ত। তাই অনেক বেলা পর্যন্ত পথ-ঘাট নির্জন থাকে। শহরবাসীদের নিকট শীতের সকাল আরামপ্রদ। সারাটা সকাল তারা নরম বিছানায় লেপ-কম্বলের উষ্ণতার আমেজে সুখনিদ্রায় বিভোর থাকে। মানুষের কর্মকোলাহল শুরু হয় সূর্যোদয়ের অনেক পরে। বাংলাদেশের অধিকাংশ গ্রামে-গঞ্জে এবং শহরের বস্তি এলাকার দরিদ্র মানুষের জীবোণে শীতের সকাল আসে নির্মমরূপে। শীতবস্ত্রের অভাবে খড়কুটো জ্বালিয়ে হিমশীতল সুদীর্ঘ রাত তারা জেগে বসে কাটায়। অপেক্ষায় থাকে সকালের এক টুকরা রোদের জন্য। শীতের সকাএ অনাহার-অর্ধাহারক্লিষ্ট গাঁয়ের কৃষক তার রুগ্ন বলদ জোড়া আর কাঠের লাঙল নিয়ে শীতে কাঁপতে কাঁপতে মাঠের দিকে যায়।কোথাও কোথাও নাড়ার আগুনে মটরশুঁটি পুড়িয়ে খাওয়া কিংবা আগুন পোহাবার দৃশ্য চোখে পড়ে।
সুবিধা
শীতকালে ঘরে ওঠে অনন ধান। এ সময় কৃষাণীরা মনের সুখে ধান মাড়াই, ধান সিদ্ধ ও পিঠা-পায়েস তৈরিতে ব্যস্ত থাকে চারদিকে নবান্ননের উৎসব চলতে থাকে। খেকজুরের রস, চিড়া-মুড়ি, পিঠা পায়েস ও খেজুরের গুড়ের মিষ্টি সুবাসে চারদিকে মৌ মৌ করে। এ সময় টাটকা মাছ, তরিতরকারি ও শাকসবজি পাওয়া যায়। ফলে খাওয়া-দাওয়ায় রুচি ফিরে আসে। শীতের সময় বেশি পরিশ্রম করা যায়। সহজে ক্লান্তি আসে না। এ সময় মশা-মাছির উদ্রবও কম থাকে।
অসুবিধা
গ্রামপ্রধান বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ গ্রামে বসবাস করে দারিদ্র্য যাদের নিত্যসঙ্গী, তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই, গরম কাপড় কেনার সামর্থ্য নেই। এমনি অবস্থায় শীত গ্রমীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠী ও শহরের বস্তিবাসীর জীবনে দুর্ভোগের কারণ হয়ে দেখা দেয়। তাছাড়া শীতকালে সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া, জ্বর এবং নানান রকম চর্মরোগের প্রকোপ দেখা দেয়।
উপসংহার
নানা অসুবিধা সত্ত্বেও শীতকাল এ দেশবাসীর বেশ পছন্দের ঋতু। কেননা এ ঋতুতে একদিকে যেমন নবান্নের উৎসব চলে অন্যদিকে তেমনি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও দেশবাসীকে আনন্দে মাতিয়ে রাখে। শীতকাল এলে আমরা তাই উল্লসিত ও পুলকিত হই।
আমাদের প্রকাশিত আরও রচনাসমূহ


4 Comments
Ifaz
ধন্যবাদ বর্ষাকাল রচনা চাই 💤
admin
Soon
রাফি
শুকরিয়া
Pingback: